Recent News

১৫ দিনে ৩৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত

আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৫ জন নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পাবনায় গত ১৫ দিনে ৩৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জন পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও ২০ জন ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিলেন।

গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জন নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক।

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও জেলার কোথাও এডিসের লার্ভা নেই বলে দাবি করেছেন সিভিল সার্জন চিকিৎসক মনিসর চৌধুরী। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট হাসপাতালে প্রথম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজন ভর্তি হন। এরপর ১৫ দিনে ১৫ জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। বাকি ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১০ জনই রূপপুর প্রকল্পের কর্মরত শ্রমিক।

গতকাল বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, মেডিসিন ওয়ার্ডে পৃথকভাবে চিকিৎসা চলছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের। তাঁদের সবাই মশারির ভেতর। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই রূপপুর প্রকল্পের শ্রমিক। দুজন রয়েছেন মাদ্রাসাছাত্র, একজন ব্যবসায়ী।

মেহেদী হাসান নামের এক তরুণ বলেন, তিনি রূপপুর প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করেন। পাঁচ দিন আগে হঠাৎ জ্বর অনুভব করলে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। পরে জানতে পারেন, তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কীভাবে কোথা থেকে আক্রান্ত হলেন, তা বুঝতে পারছেন না। অসুস্থ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে তিনি ঢাকা থেকে ফিরেছিলেন।

রাসেল বিশ্বাস নামের আরেকজন বলেন, তিনি রূপপুর প্রকল্পের একটি বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তাঁর বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার বাঘইল গ্রামে। এলাকা ছেড়ে কোথাও যাননি। গত মঙ্গলবার সকালে প্রকল্পের কাজে যোগ দিয়েছিলেন। দুপুর থেকেই তীব্র জ্বর অনুভব করেন। এরপর এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক ওমর ফারুক মীর বলেন, হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। তবে হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। ভর্তি রোগীদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আসমা খান জানান, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁরা সবাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক। সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে অন্তত ১৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বলেন, কর্মীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, বিষয়টি জানার পরই সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

তবে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরে এসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সিভিল সার্জনের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে। কোথাও কোনো এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়নি।

সিভিল সার্জন চিকিৎসক মনিসর চৌধুরী বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশ রূপপুর প্রকল্পের শ্রমিক হলেও তাঁরা ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। জেলার কোথাও এখনো লার্ভা পাওয়া যায়নি।